প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বহুল প্রচলিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত শব্দগুলো যে ভাষা থেকেই আসুক, সেগুলো ওই ভাষায় ব্যবহার করা উচিত। সেগুলোর পরিভাষা ব্যবহার করলে কিছুই বোঝা যাবে না, এমনটা যেন না হয়। তাই রক্ষণশীল না হয়ে প্রচলিত শব্দ ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান পড়ার আগ্রহই ছিল না। এজন্য ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। এছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর ভাষা বা গবেষণার ব্যাপারেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বিজ্ঞানের চর্চা বা গবেষণা ছাড়া এগোনো যায় না। তাই ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়। এতে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হইনি, বিজ্ঞানেও এগিয়ে যাচ্ছি বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, বিজ্ঞানের এই যুগে বিজ্ঞান যেভাবে বিস্তার লাভ করছে, সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভাষাও রয়েছে, ইংরেজী, ফ্রেঞ্চ বা অন্য ভাষাও রয়েছে, যা এর ভেতর যুক্ত হয়ে গেছে। আর আমাদের বাংলা ভাষায় কিন্তু ৮ হাজার ভাষার শব্দ মিলে মিশে গেছে। কাজেই এ ব্যাপারে খুব বেশি ‘রক্ষণশীল’ না হয়ে প্রচলিত শব্দগুলো, প্রচলিত বিজ্ঞানের ‘টার্মস’গুলো ব্যবহার করেই বাংলা ভাষায় সহজভাবে বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, কনটেন্ট-এর বাংলা ‘আধেয়’। এটা সবাই জানে না, কনটেন্ট হিসেবেই বেশি চেনে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কোর এদেশীয় প্রতিনিধি এবং হেড অব অফিস বিয়েট্রেস কালডুন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক স্বাগত ভাষণ দেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্ত্রি পরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন দূতাবাস, মিশন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তাগণ ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।