দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে চা শ্রমিক নেতারা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন; কিন্তু সাধারণ চা শ্রমিকরা এতে একমত হতে পারেননি। তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দেন।
শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর কার্যালয়ে বৈঠকে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে ফিরে আমাদেরকে নিয়ে বসবেন বলে জানিয়েছেন।’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে আমাদের দাবি-দাওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতি তাকে জানানো হবে। তাই তার আশ্বাসে আপাতত আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলাম। রবিবার, ২১ আগস্ট থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন।
এদিকে, নেতাদের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ সাধারণ শ্রমিকরা। আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা শুনে তারা শ্রম দপ্তরের সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন। স্লোগান দিতে থাকেন ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে। আপস না করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথাও ঘোষণা দেন।
বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে চা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো আব্দুস শহীদ,বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরে মহা পরিচালক খালেদ মামুন চোধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
সংসদ সদস্য মো আব্দুস শহীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের প্রতি খুবই আন্তরিক। তারই নির্দেশে এখানে এসেছি। মালিকপক্ষ ২০ টাকা মজুরি বাড়াতে চেয়েছিলেন; কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আরও ৫টাকা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে এসে চা শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বসবেন।
বৈঠক শেষে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম জানান, চা শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কাল থেকে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।
প্রসঙ্গত, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন শুরু করেন মৌলভীবাজার জেলার ৯২টিসহ দেশের সব চা বাগানের শ্রমিকরা। দাবি আদায়ে এর আগে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সব চা বাগানে টানা ৪ দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতিও পালন করেন; কিন্তু তাতেও সাড়া না মেলায় পরবর্তীতে একযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা করা হয়।