গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে সমাহিত করা হয় তাকে। এর আগে এদিন সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয় গীতিকারের মরদেহ। সেখানে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার দেয়া হয়। তারপর বেলা ১১টার দিকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে গুণী এই ব্যক্তিকে সর্বসাধারণের জন্য শ্রদ্ধা জানাতে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
এর আগে এফডিসিতে নেয়া হয় তার মরদেহ। সেখানেই তার প্রথম জানাজা অনুষ্টিত হয়। এসময় সহকর্মী ও প্রিয় মানুষেরা শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধা জানান। তারপর রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় তার মরদেহ।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন। গীতিকবিতায় অবদান রাখার জন্য ২০০২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গানের এই গীতিকার। দীর্ঘ দিনের ক্যারিয়ারে তার লেখা উল্লেখযোগ্য কিছু গানের মধ্যে রয়েছে ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’। এছাড়া তার লেখা কালজয়ী গানগুলো হলো ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ প্রভৃতি।
১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তিনি ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের শুরু থেকেই গান ও নাটক রচনা করেন।
১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের জন্য প্রথম গান লিখেছেন তিনি। এরপর কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লেখাতেও পারদর্শিতা দেখান এই কিংবদন্তি গীতিকার।