চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১০ম বারের মতো চা পাতার নিলাম। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) চা নিলাম কেন্দ্রের অস্থায়ী অফিস শ্রীমঙ্গল জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামের হলরুমে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। গত কয়েকদিন আগে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে এবার চা পাতার নিলামে চায়ের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে আগের তুলনায় চায়ের বিক্রি কমে এসেছে অর্ধেকে।
চা নিলামে শ্রীমঙ্গলের ৪টি ব্রোকারস হাউজ এবং ৪০ জন বায়ার অংশগ্রহণ করেন। এবার নিলামে উঠে মোট ৮৫ হাজার ৭শ ৪৭ কেজি চাপাতা। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১৪ কোটি ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। কিন্তু নিলামের চাপাতার কোয়ালিটি ভালো না থাকায় বিক্রি হয় প্রায় ৪০ হাজার কেজি চা পাতা। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। এর আগে গত ২৪ আগস্ট ১ লক্ষ ১১ হাজার ৩৫০ দশমিক ৪০ কেজি চা পাতা নিলামে উঠে এবং গত ১০ আগস্ট নিলামে উঠে ২ লক্ষ ৪ হাজার ৪৫০ কেজি পাতা। বিক্রি হয় ৮০ হাজার ২৫০ কেজি চা পাতা। যার বাজারমূল্য ছিল ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫শত টাকা।
শ্রীমঙ্গল টি ট্রেডার্স এন্ড প্লান্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মুনির বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের কারনে পাতা বেড়ে চায়ের মান নষ্ট হয়েছে। এ থেকে উত্তরণে সময় লাগবে। চা শ্রমিকদের মজুরী বাড়ায় এখন চায়ের মূল্যও বৃদ্ধি পাবে। কারণ এখন চা উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাবে। তিনি বলেন এ সুযোগে ভারত থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে নিম্নমানের চা দেশের বাজারে আসবে, এতে চায়ের গুণগতমান নষ্ট হবে এবং দেশীয় চা শিল্প হুমকির মুখে পড়বে। আর টি ট্রেডার্স এন্ড প্লান্টার্স এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব জহর তরফদার বলেন, জেলার ৪০টিরও বেশি চা বাগানের পাতা নিলাম হচ্ছে এখানে। বিশেষভাবে বড় গ্রুপের মধ্যে সিটি গ্রুপ এখানে চা পাতা দিচ্ছে। যদি তাদের মত ইস্পাহানী, ফিনলে, ডানকান, সাতগাঁও চা, এনটিসি তাদের চা পাতা শ্রীমঙ্গলের এই নিলাম কেন্দ্রে ব্রোকারস হাউজের মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করেন তবে এ সংকট অনেকটা কমে আসবে।
দেশের চা-শিল্পের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে প্রায় ৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন করে চা-শিল্পের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল চা শিল্প। এবছর তাই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১শ মিলিয়ন কেজি। মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে ৯২টি চা বাগান। চায়ের সিংহভাগ উৎপাদিত হয় এ জেলায়।