মৌলভীবাজারে পাঁচ দিনব্যাপী শারদ উৎসবের শেষ দিন বুধবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এক দিকে আনন্দ অন্য দিকে বিষাদের সুর আর চোখের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মা দুর্গা তার সন্তান কার্তিক, গণেশ, লক্ষমী, সরস্বতীসহ কৈলাসে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাবেন।
সকাল থেকে পুষ্পাঞ্জলি নেয়ার পাশাপাশি শেষবারের মত মায়ের দর্শন নিতে হিন্দু ভক্তবৃন্দরা বিভিন্ন মন্ডপে মন্ডপে ভিড় করেন। এ সময় একে অপরকে গালেমুখে সিঁদুর মেখে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন তাঁরা। পরে নারী, শিশুসহ সকল বয়সের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিসর্জনে অংশ নেন।
বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে জেলার সব পূজা মন্ডপে দেবী দুর্গার বিজয়া দশমী বিহিত পূজার মাধ্যমে পালিত হয় দশমী। এরপর পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল ৪টার পর পরই বিজয়া শোভাযাত্রা শেষে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। শঙ্খ, উলুধ্বনি, খোল-করতাল, ঢাক-ঢোল ও কাঁসার বাজনার সঙ্গে মৌলভীবাজার মনু নদীর ঘাটে সব মন্ডপের দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
এসময় পূজামন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য টহলে ছিলো। অপৃতিকর ঘটনা এড়াতে বিসর্জন ঘাট ও মন্দিরে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, পৌরসভার মেয়র মোঃ ফজলুর রহমানসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা দূর্গাপূজা বিসর্জন ঘাটের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাদি পরিদর্শন করেন।
গত শনিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবছর মৌলভীবাজার জেলায় এক হাজার সাতটি পূজামন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী জানা যায়, এবার ভক্তদের কাছে দেবী আসেন গজে (হাতি) চড়ে, এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আর স্বর্গে বিদায় নেন নৌকায় চড়ে, যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।