মৌলভীবাজার এখন শীতে কাবু। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমের সর্বনিম্ন। ফলে জীবনযাত্রা প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকালে চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় জেলার শ্রীমঙ্গলে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েকদির ধরেই এখানে তাপমাত্রা নিম্নগামী। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ২০১৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
শ্রীমঙ্গলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, কুয়াশা ও মেঘ কেটে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। জেলার উপর দিয়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এ অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। এ অঞ্চলে মূলত জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশি থাকে।
এ অবস্থায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেননা। টানা কয়েক দিন থেকে শীতের এমন তীব্রতায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। সময়মতো কাজে যোগ দিতে না পেরে সীমাহীন দুর্ভোগে আছেন শ্রমজীবী-দিনমজুররা। দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষক আর ছিন্নমূল মানুষজনও। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। পশুর গায়ে ছেঁড়া বস্তা আর কাঁথা দিয়ে চলছে শীত নিবারণের চেষ্টা। প্রকোপ বেড়েছে শীতজনিত নানান রোগেরও। তাই গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলায় চারা বাড়তে দেরি হচ্ছে। কৃষকরা শীতের কারণে মাঠে যেতে পারছেননা। শীত ও ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে ধানে চিটা হতে পারে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুরর্শেদ জানান, অন্যসময়ের তুলনায় এখন শীতজনিত রোগে প্রতিদিন জেলার সরকারি-বেসরবারি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, এ পর্যন্ত জেলায় মোট বরাদ্দ এসেছে ৩৫ হাজার ২৮০টি কম্বল। ইতোমধ্যে এগুলো ৭ উপজেলার ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।