নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির সেজান জুস কারখানায় রাতভর পুড়েছে ৫০ শ্রমিকের লাশ। শুক্রবার দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে একে একে সবার লাশ বের করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (অপারেশন ম্যান্টেন) দেবাশীষ বর্মণ জানান, এখন পর্যন্ত কারখানার ভেতর থেকে ৫০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) পরীক্ষার মাধ্যমে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় এ আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাততলা ভবনের ছয়তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ভবনে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সকাল ৬টার দিকে কারখানার চারতলায় ফের আগুন বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সাততলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচ তলার একটি ফ্লোরে কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়।
একপর্যায়ে ছোটাছুটি শুরু করেন শ্রমিকরা। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না ও মিনা নামে দুই নারী নিহত হন। পরে মোরসালিন লাফ দিয়ে আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।