মৌলভীবাজারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের আপন ভাই-বোন সহ ৪ জন ও উপসর্গ নিয়ে আর ১ জন সহ মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯১ জন।
করোনায় মৃত্যুবরণকারীরা হলেন, শ্রীমঙ্গলের মির্জাপুর এলাকার একই পরিবারের ছোট ভাই বেনু ভট্টাচার্য্য (৬২) গত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মারা যান। ওই রাত ৪ টার দিকে বড় বোন শীলা ভট্টাচার্য (৭৫) মারা যান। তারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেটের একটি হাসাপাতালে আইসিইউতে গত ৭ দিন ভর্তি ছিলেন, অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় ২৮ জুলাই সন্ধ্যায় তারা বাড়ি ফিরেন।
এদিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভোর ৫টায় শ্রীমঙ্গলের সিরাজনগর গ্রামের আলেয় খাতুন (৩৫) ও সকাল সাড়ে ৭টায় করোনায় রাজনগর উপজেলার সাকেরা চা বাগান এলাকার মিনতি দেব (৬০) মারা যান। আর ভোর সাড়ে ৬টায় কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ এলাকার জয়নাল মিয়া (৪৩) করোনায় সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে মৌলভীবাজার জেলার আর ১৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় পাঠালে ৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়, পরিক্ষা অনুযায়ি শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, তিনি জানান গত ২৪ ঘন্টায় ১৯৯ টি নমুনা পরীক্ষায় পাঠালে ৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত এ জেলায় জেলায় মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ১৯৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৫৮৩ জন। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৬৭ জন।
নতুন শনাক্ত ৯১ জনের মধ্যে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৯ জন, জুড়ী ৫ জন, শ্রীমঙ্গলে ১৮ জন, কমলগঞ্জে ৭ জন, বড়লেখা ২৮ জন, কুলাউড়া ২০ জন ও রাজনগরে ৪ জন।
সরকারী হিসেবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেন ৫৬ জন। তবে করোনায় আক্রান্ত মৃত্যুবরণকারী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বে-সরকাররি হিসেব অনুযায়ি জেলার বাহিরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৭ জন।
এদিকে, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান ও করোনা উপসর্গ রোগিদের স্যাম্পল কালেকশন কার্যক্রম সহ হাসপাতালের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ। এসময় তার সাথে ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান, পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান, সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ, ভারপ্রাপ্ত তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ বিনেন্দ্র কুমার ভৌমিক, হাসপাতালের আরএমও ডাঃ ফয়ছাল জামান, জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি আজমল হোসেন।
পরিদর্শন শেষে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান ও অন্যান্য সেবা কার্যক্রম সুশৃঙ্খল ভাবে সম্পন্ন হচ্ছে জানিয়ে সংসদ সদস্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন এই সুশৃঙ্খলতা যাতে অভ্যাহত থাকে এবং হাসপাতাল যাতে নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকে।